,

শিক্ষার্থীদের সামনেই প্রধান শিক্ষককে নেত্রীর কিল-ঘুষি

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সামশাদ রানু।

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: শিক্ষার্থীদের সামনেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শার্টের কলার চেপে ধরে কিল-ঘুষি মেরেছেন যুব মহিলা লীগের এক নেত্রী।

বুধবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

লাঞ্ছনার শিকার প্রধান শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম খান। আর অভিযুক্ত সামশাদ রানু ওরফে রাঙ্গা ভাবি জেলা যুব মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মহিলা প্যানেল মেয়র।

লাঞ্ছনার শিকার প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ (বুধবার) বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা ছিল।

‘অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলায় সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। তাই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। তাদের মধ্যে সামশাদ রানুর ছেলে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্কও ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে আসতেই আমার শার্টের কলার চেপে ধরে টানতে টানতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে যান সামশাদ রানু। একইসঙ্গে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় পায়ের জুতা খুলেও তিনি আমাকে মারধর করতে যান। অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসায় তিনি জুতা দিয়ে আমাকে মারতে পারেননি।

‘সামশাদ রানু বিদ্যালয়ে সবার সামনে আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। আকষ্মিক এ ঘটনায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। বিষয়টি মোবাইল ফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি।’

অভিযুক্ত সামশাদ রানু এ বিষয়ে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের কক্ষ না খোলায় আমার ছেলেসহ প্রায় ৮শ’ শিক্ষার্থী সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তীব্র তাপদাহের মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। সোয়া ১০টার পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে আমি তাকে শ্রেণিকক্ষের তালা খোলার কথা বলি। ‘তিনি বলেন- এই দায়িত্ব আমার না, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস ও কর্মচারী সিদ্দীকের। তিনি আমাকে উল্টো বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা আপনাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে।’

রানু বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের এমন বক্তব্যের জবাবে তাকে আমি বললাম, আমি এখানে কোনো নেত্রী হিসেবে না, অভিভাবক হিসেবে এসেছি। এরপরই আমি তার জামার কলার চেপে ধরে টেনে নিয়ে ‘তালা খোল’ বলে কক্ষের তালা খুলিয়েছি। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে।’

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গার ইউএনও রনি আলম নূর বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাকে আমার কার্যালয়ে আসতে বলেছি। অভিযোগ পেলে ওই নারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর